বিধবা মহিলা (পর্ব ১ )

 মায়ের জোড়াজুড়িতে বিয়ে করতে হলো এক বিধবা মহিলাকে।

 মহিলা না, মেয়েই বটে। বয়স বেশি না, আমার চেয়ে এক দু বছরের ছোট হবে,

 তবে বাচ্চা মেয়ে আছে একটা। আমার একদম ইচ্ছা ছিলনা বিয়েতে

যেচে এরকম পূর্ব বিবাহিত মেয়েকে বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট করার মানে নেই

কিন্তু মায়ের বান্ধবীর মেয়ে হওয়ায় জোর করেই বিয়ের পিড়িতে বসতে হলো। 

আজ আমার বাসর রাত। মনে একপ্রকার ঘৃণা নিয়েই ঘরে ঢুকলাম

 সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো বিছানায় একটা লাল শাড়ি পরিহিত মেয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে

মেয়ে মাশাল্লাহ খুব সুন্দরী। কিন্তু আমার প্রবলেম তার মেয়ে নিয়ে

আমি ভেতরে গিয়ে মাথার পাগড়ি ছুড়ে মারলাম বিছানায়। চমকে উঠল মেয়েটা,

" দেখুন, আমি আপনাকে আমার স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবনা

 মায়ের ইচ্ছাতে বিয়েটা করেছি। ব্যস, এ পর্যন্তই। আমার কাছে আর ঘেষতে আসবেন না

আর আপনার মেয়েকেও আমার কাছ থেকে দূরে রাখবেন

স্ত্রীর অধিকার আমার উপর ফলাবেন না, প্লিজ। "

ধরাম করে দরজা সজোরে লাগিয়ে বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে

 মেয়েট ফোঁপাতে ফোঁপাতে কাঁদতে লাগল৷ আমি ছাদে গিয়ে দাঁড়ালাম

 আকাশে এতো মধুর রূপোর থালার মত চকচকে চাঁদ থাকা সত্ত্বেও আমার সেটা ভাল লাগছেনা। আমার জীবনটাই যে বরবাদ হয়ে গেল

 শেষে কিনা এক বিধবার সাথেই বিয়ে করতে হলো

মায়ের উপর খুব রাগ হচ্ছে

 কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ঠান্ডা বাতাসে মন ফুরফুরে করে, আরেক রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। 

পরদিন থেকে আমি ইগনোর করতে লাগলাম তাদের

 মেয়েটা মাথা নিচু করে কাজের লোকের মত বাড়ির সব কাজ করে, কিন্তু আমি সারাদিন বাইরে বাইরে থাকি

 তার এক বছরের মেয়েটা হামাগুড়ি দিতে দিতে, আর মুখে অস্পষ্ট কিছু উচ্চারণ করতে করতে সারা বাড়ি ঘুরে বেড়ায়

বাড়িতে শুধু আমরা তিনজনই থাকি। সারাদিন কাজ শেষে যখন বাড়ি ফিরি,

 তখন দেখি বাচ্চা মেয়েটা হামাগুড়ি দিতে দিতে আমার সামনে আসে

আমার দিকে তার মায়াবী চোখ দিয়ে তাকায়। বিরক্ত লাগে আমার তাকে দেখলে

আমি পাশ কাটিয়ে নিজের রুমে চলে যাই। ওর মা চুপচাপ আমায় খাবার

দিয়ে যায়,

একটা বারও মাথা উঁচু করে তাকায় না

আমিও কিছু না বলে চুপচাপ

 খেয়ে নেই

 আর নিজের কাজ নিজে করে যাই। ওরা আলাদা রুমে ঘুমায়

 আর আমি আলাদা রুমে ঘুমাই। 

একদিন বাড়ি ফিরে এসে নিজের রুমে গিয়ে দেখি সব লন্ড ভন্ড হয়ে আছে

নিশ্চয়ই ওই বাচ্চা মেয়েটা করেছে এইরকম। আমি চটে গেলাম

 আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল। আমি রাগে ফোসাতে ফোসাতে

 চিৎকার দিয়ে উঠলাম, 

" রাজিকা....."

আমার বিধবা বউটা দৌড়াতে দৌড়াতে আসল রুমে

মাথা নিচু করে কাঁদো কাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করল, 

" জি…জি, কি হয়েছে? "

" এই কি হাল হয়েছে আমার রুমের। কে করেছে এমন

 নিশ্চয়ই আপনার মেয়েটা। কতবার বলবো ওকে আমার থেকে দূরে রাখবেন৷ একটা কথা একবার বললে কানে যায়না? "

রাজিকা কাঁদতে কাঁদতে আমার পায়ে পড়ে গেল,

" এই…এই কি করছেন? "

" প্লিজ…প্লিজ ওকে ক্ষমা করে দিন

 অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। আর কোনোদিন হবেনা। প্লিজ। "

আয়েশার অশ্রুজল টপ টপ করে আমার পায়ে পড়ছে। যতসব আদিখ্যেতা

 আমি ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেলাম বাইরে। আবার ফিরে

 এলাম গভীর রাতের দিকে। আমি সোজা চলে গেলাম আমার ঘরে

 রুমে ঢুকেই আমি চমকে গেলাম। খুব সুন্দর করে পরিপাটি ভাবে গোছানো ঘর

 এমনকি আগের চেয়েও সুন্দর ভাবে। সেটা দেখে আমার মনটা একটু ভাল হলো

ক্লান্ত শরীরটা এলিয়ে দিলাম বিছানায়। লাইট, ফ্যান অফ করে শুয়ে পড়লাম

খুব ঠান্ডা পড়েছে। পিনপতন নীরবতার মাঝে হঠাৎ আমার কানে ভেসে আসল করুণ ফোঁপানির আওয়াজ

 বুঝতে পারলাম রাজিকা পাশের রুমে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমি তোয়াক্কা না করে শুয়ে পড়লাম।

পরের টুকু দেখার জন্য পেজটিতে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন। 

Comments

Popular posts from this blog

পিচ্ছি কালের গুন্ডি বউ (পর্ব:-১ )

ফারাক্কা ব্রীজ এর ইতিহাস

বুক ফাটানো গল্প (পর্ব_ ৩)